তিস্তা চুক্তির পক্ষে সওয়াল কংগ্রেসের

তিস্তা চুক্তির পক্ষে সওয়াল কংগ্রেসের

পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার কথা বলল কংগ্রেস। শনিবার সন্ধ্যায় ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরে ৮৫ তম অধিবেশনে পেশ করা আন্তর্জাতিক প্রস্তাবে কংগ্রেস এই কথা বলেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র নীতি এবং আঞ্চলিক স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে যেসব বিষয় এখনো অমীমাংসিত সেগুলির দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। সেই সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই করা দরকার। অধরা তিস্তা চুক্তির উল্লেখ না করে প্রস্তাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন চুক্তির সমাধান হওয়া দুই দেশের সুসম্পর্কের স্বার্থেই জরুরি।

আন্তর্জাতিক প্রস্তাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে এই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক বিশ্বাস, সহযোগিতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক আদ্যন্ত খোলামেলাও। সেই সম্পর্ক স্থাপনে কংগ্রেসের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে বলা হয়েছে, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশকে স্বাধীন হতেই শুধু সহযোগিতার হাত বাড়াননি পরবর্তী সব কংগ্রেস সরকার ওই প্রতিবেশী দেশকে স্থিতিশীল হতে সাহায্য করেছে। সেই বিশেষ সম্পর্ক কাজে লাগিয়েই স্থল সীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্র সীমা নির্ধারণ চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বকেয়া সব অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধানের জন্যও ওই সম্পর্কের ওপরই ঝুঁকতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়ে।

আন্তর্জাতিক প্রস্তাবে সরাসরি তিস্তা চুক্তির উল্লেখ অবশ্য করা হয়নি। তবে অর্থনৈতিক সংহতি দৃঢ় করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে কংগ্রেস বুঝিয়ে দিয়েছে, সেই সংহতি এমন হওয়া উচিত যাতে সাম্য প্রতিষ্ঠা হয় এবং উভয় দেশই সমান লাভবান হয়।

ভারতের প্রতিবেশী নীতি সম্পর্কে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে কংগ্রেস বলেছে, দুঃখের বিষয়, গত আট বছরে বিজেপির নীতির দরুন প্রতিবেশীদের কাছে ভারতের ভূমিকার গুরুত্ব কমে গেছে। আর সেই সুযোগ গ্রহণ করেছে চীন। প্রতিবেশীদের চীনের প্রভাব মুক্ত করতে তাদের স্বার্থ রক্ষার দিকে ভারতের বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে কংগ্রেস মনে করে।

সেটা করতে গেলে সরকারের কী কী করা দরকার সেই স্পষ্ট ইঙ্গিতও ওই প্রস্তাবে রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, সে জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ন্যায্য চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষার দিকে ভারতকে নজর দিতে হবে। সে জন্য বাড়তি রাস্তা হাঁটতে হবে। কংগ্রেস বলেছে, বিজেপি সরকার এত দিনেও তা করে উঠতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে নাম না করে কংগ্রেস সিএএ-এনআরসি অবতারণা করেছে। বুঝিয়ে দিয়েছে, বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ত্রুটিযুক্ত। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমরা কেমন ব্যবহার করছি শুধু তার ওপর ধারণা সৃষ্টি হয় না। ধারণা সৃষ্টি হয় বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ বিষয়ের মোকাবিলা কীভাবে করছি তার ওপর। এই দিকে আমাদের সব প্রতিবেশী তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ়তর করার মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক স্তরে ভারতের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার পরামর্শ আন্তর্জাতিক প্রস্তাবে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখানেই চলে আসছে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়। এবং অবশ্যই সিএএ-এনআরসি প্রসঙ্গ, বাংলাদেশ যা মেনে নিতে পারেনি।