মুদ্রার দরপতন ঠেকাতে দেশে দেশে ডলার বিক্রি

মুদ্রার দরপতন ঠেকাতে দেশে দেশে ডলার বিক্রি

মুদ্রার পতন ঠেকাতে এশীয় সরকারগুলো গত মাসে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যয় করেছে।

চার দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে আগ্রাসীভাবে সুদহার বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। তবে এশিয়ার দেশগুলো অতটা আগ্রাসী নয়। নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে উভয়সংকটে পড়েছে এসব দেশ—একদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা এবং আরেক দিকে মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে কঠোর মুদ্রানীতি।

অর্থনৈতিক এই সংকটের সময় মার্কিন ডলারের বিনিময় হার বাড়ছে। এশীয় মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ অবস্থায় ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশগুলো। মুদ্রার পতন ঠেকাতে এশীয় সরকারগুলো গত মাসে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যয় করেছে, যা ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর সর্বোচ্চ। খবর স্ট্রেইটস টাইমসের

বিশ্বব্যাপী পুঁজির প্রবাহ নজরদারি করে মার্কিন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এক্সান্টি ডেটা। তাদের তথ্যানুসারে, চীন ব্যতীত এশিয়ার উদীয়মান দেশগুলো সেপ্টেম্বর মাসে খোলাবাজারে বিক্রির জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি ডলার ছেড়েছে। জাপানকে অন্তর্ভুক্ত করলে এ ব্যয়ের পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি ডলার। বাংলাদেশও প্রতিনিয়ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে।

এক্সান্টি ডেটার তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে জাপানসহ এ অঞ্চলের ডলার বিক্রি প্রায় ৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের এ প্রবণতা ২০০৮ সালের পর সবচেয়ে সক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্থাটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি কর্তৃপক্ষের তথ্যের ভিত্তিতে এ হিসাব করেছে। এদিকে অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের সূচক ১৯৮০-এর দশকের পর সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে। ডলারের ঊর্ধ্বগতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত অন্যান্য মুদ্রার মূল্যমান হ্রাস করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, তাইওয়ান, জাপানসহ উদীয়মান অর্থনীতিগুলো ব্যাপকভাবে ডলার বিক্রি করেছে। সেপ্টেম্বর মাসে জাপানের দুই হাজার কোটি ডলার বিক্রি ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গত মাসে হংকং, ফিলিপাইন, তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ডলার বিক্রি করেছে।