“জনসংখ্যাগত বিশৃঙ্খলা: উপরাষ্ট্রপতির সতর্কবার্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তার সংকট”

“জনসংখ্যাগত বিশৃঙ্খলা: উপরাষ্ট্রপতির সতর্কবার্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তার সংকট”
ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখর সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এটিকে জাতীয় সুরক্ষার জন্য একটি বড় হুমকি হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং এর প্রভাবকে একটি “পারমাণবিক বোমার” ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার সঙ্গে তুলনা করেছেন। পিটিআই সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার, জয়পুরের বীরলা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
উপ রাষ্ট্রপতি ধনখর উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে দেশের কিছু অংশে এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন কৌশলগতভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যা একটি গভীর সমস্যা সৃষ্টি করছে। তিনি জানান, এই পরিবর্তনগুলি অনেক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রকৃত ভিত্তি এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে, যেখানে কিছু অঞ্চলে নির্বাচনের আর কোনও কার্যকর অর্থ থাকছে না।
“জনসংখ্যাগত পরিবর্তন কৌশলগতভাবে পরিচালিত”
উপ রাষ্ট্রপতি ধনখর স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি কখনও “প্রাকৃতিক ও জৈবিক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের” বিরুদ্ধে নন। তবে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, যেভাবে কৌশলগতভাবে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত ভীতিকর। এই ধরনের পরিবর্তন জাতীয় স্বার্থকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের পরিবর্তন বিগত কয়েক দশকে একটি “বিপজ্জনক প্যাটার্ন” প্রকাশ করছে, যা আমাদের সভ্যতার মূলনীতিগুলি, আমাদের সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করছে।
ধনখর বলেন, “যদি এই বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে মোকাবিলা না করা হয়, তবে এটি একটি অস্তিত্বের হুমকিতে পরিণত হতে পারে। এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা এই ধরনের জনসংখ্যাগত সংকটের কারণে তাদের নিজস্ব পরিচয় হারিয়ে ফেলেছে,” তিনি বলেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ‘গণতন্ত্রের ক্ষতি’
ধনখর আরও দাবি করেছেন যে কিছু রাজনীতিবিদ শুধুমাত্র সংবাদপত্রের শিরোনাম পেতে জাতীয় স্বার্থকে ত্যাগ করতে পিছপা হন না এবং এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপর বড় ধরনের আঘাত হানা হচ্ছে। তিনি এই ধরনের রাজনীতিবিদদের “অরাজকতার চ্যাম্পিয়ন” হিসাবে উল্লেখ করেন এবং বলেন যে এরা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মূল্যবোধকে অবমূল্যায়িত করছে।
উপ রাষ্ট্রপতি বলেন, “এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক যে কিছু এলাকায় এই কৌশলগত পরিবর্তনগুলি এতটা গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে যে, সেগুলি রাজনৈতিকভাবে দূর্গে পরিণত হয়েছে। সেই এলাকাগুলিতে গণতন্ত্র তার প্রকৃত অর্থ হারিয়েছে। নির্বাচন শুধুমাত্র একটি আনুষ্ঠানিকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
‘দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি’
ধনখর উল্লেখ করেছেন যে তিনি কোনও নির্দিষ্ট দেশের নাম নিতে চান না, তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের কারণে কিছু দেশ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, পরিচয় এবং স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে হারিয়েছে। তিনি এর প্রতিকার হিসাবে একমাত্র উপায় বলে উল্লেখ করেছেন যে এ ধরনের জনসংখ্যাগত পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। “এই বিপজ্জনক পরিবর্তনগুলিকে উপেক্ষা করা আমাদের সভ্যতা এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় বিপদ হতে পারে,” তিনি সতর্ক করেছেন।
এছাড়াও, পড়ুন :
এয়ারক্রাফ্ট সার্কিট ব্রেকার বাজারের আকার 4.70% এর CAGR এ বাড়ছে, এই প্রতিবেদনটি 2024-2030 এর প্রকার, বিভাজন, বৃদ্ধি এবং পূর্বাভাস দ্বারা বিশ্লেষণ কভার করে
উল্লেখ্য, ধনখরের এই মন্তব্যগুলি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে এসেছে। কিছু সমালোচক মনে করেন যে তার বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার উপর একটি সরাসরি প্রতিক্রিয়া, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এবং বিতর্কের সঙ্গে সম্পর্কিত।
সভ্যতার সংকট
উপ রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে আরও উল্লেখ করেন যে দেশের কিছু অঞ্চলে গণতন্ত্র এবং সভ্যতার মূল স্তম্ভগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে যদি এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তনগুলি নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে দেশের মূল সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক ভিত্তিগুলির উপর আঘাত হানতে পারে।
“আমি কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলের কথা বলছি না, তবে আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি যে কয়েক দশক ধরে কীভাবে কিছু অঞ্চলে এক ধরনের কৌশলগত পরিবর্তন ঘটছে। এর ফলে সেখানকার সামাজিক কাঠামো এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রভাবিত হচ্ছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের প্রকৃত ক্ষমতা হারাচ্ছে এবং জাতীয় নিরাপত্তার উপর হুমকি তৈরি হচ্ছে।”
উপ রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন যে তার বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে এবং বিশেষ করে দেশের জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের কারণে সৃষ্টি হওয়া সমস্যাগুলি নিয়ে তার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।